এরশাদের সামরিক শাসন অবৈধ: সুপ্রিম কোর্ট
ঢাকা, মে ১৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)-
সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ই বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে রিট আবেদনকারী সিদ্দিক আহমেদকে সামরিক আদালতে দেওয়া সাজাও বাতিল হয়েছে।
সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ওপর রোববার এ রায় দেয় প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারকের বেঞ্চ।
এরশাদের সামরিক শাসনের সময় একটি হত্যামামলায় সামরিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিক আহমেদের রিট আবেদনে হাইকোর্ট ২০১০ সালের ২৬ অগাস্ট সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে।
তবে রায়ে সিদ্দিকের সাজা বহাল থাকায় তিনি হাইকোর্টের রায়ের অংশ বিশেষের বিরুদ্ধে এ বছরের ১১ এপ্রিল আপিল করেন। শুনানি শেষে রোববার রায় হলো। তার আপিল আংশিক মঞ্জুর হয়েছে। সামরিক আদালতে তার সাজা বাতিল হলেও মামলা বাতিল করেনি আপিল বিভাগ।
রায়ে আপিল বিভাগ এরশাদের শাসনামলের ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত জারি করা সব সামরিক ফরমান, আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছে। তবে ওই সময়কালের কিছু বিষয় শর্ত সাপেক্ষে মার্জনা করা হয়েছে। বহাল রাখা হয়েছে রাষ্ট্রের পক্ষে করা সব চুক্তি।
রায়ে বলা হয়, সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা বহাল রাখা হলো। সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের প্যারাগ্রাফ-১৯ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হলো।
রায়ের পর আপিলকারীর আইনজীবী সৈয়দ আমিরুল ইসলাম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, এর ফলে এরশাদের সামরিক শাসন অবৈধই থাকলো।
কী শর্তে বিভিন্ন বিষয় মার্জনা করা হলো- জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত এ বিচারপতি বলেন, "যে সব কাজ পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে, সেগুলো পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজ। অর্থাৎ কাউকে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে, সে ইতোমধ্যে সেই সাজা ভোগ করেছে। তাহলে তা পাস্ট এন্ড ক্লোজ হিসাবে মার্জনা করা হয়েছে।"
হাইকোর্টের রায়ে সিদ্দিককে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিলো।
সিদ্দিকের অন্য আইনজীবী হাসান এসএম আজিম সাংবাদিকদের জানান, তার মক্কেল গত ৪ এপ্রিল চট্টগ্রামের জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
আমিরুল বলেন, "রায়ে বলা হয়েছে, সামরিক আদালতে স্থানান্তরের পূর্বের অবস্থা থেকে সিদ্দিক আহমেদের মামলার কার্যক্রম আবার শুরু হবে।"
মামলা বাতিলে সিদ্দিকের আবেদন নাকচ হলেও তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে আপিল বিভাগ। রায়ে বলা হয়েছে, বিচারিক আদালতে বিচার শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ জামিন কার্যকর থাকবে। বিচার শুরুর পর তা ওই আদালতের বিচারকের ওপর নির্ভর করবে।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছিলো, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের জারি করা সামরিক শাসন, এর পর থেকে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত জারি করা সব সামরিক আদেশ, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের আদেশ, সামরিক আইন আদেশ ও সামরিক আইন-নির্দেশ অবৈধ।
তবে বিশৃঙ্খলা এড়ানোর জন্য পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়ের আলোকে এরশাদের আমলের কর্মকাণ্ডকে মার্জনা করে আদালত।
এর আগে জিয়াউর রহমানের সময়ের সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীও বাতিল করে উচ্চ আদালত।
সপ্তম সংশোধনীর বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ে আরো বলা হয়, "ভবিষ্যতে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল রোধ করার জন্য সংসদ অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর শাস্তি নির্ধারণ করতে পারবে।"
"খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবু সা'দাত মোহাম্মদ সায়েম এবং জিয়াউর রহমানের মতো এইচএম এরশাদও অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী। তার এ কাজকে মার্জনা করা যেতে পারে না। অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী হিসেবে এরশাদ তার দায় এড়াতে পারেন না", বলে হাইকোর্ট।
আপিলের শুনানিতে সর্বোচ্চ আদালত আদালত-বন্ধু (অ্যামিকাস কিউরি) হিসেবে তিন জনের বক্তব্য শোনে। তারা হলেন- রফিক উল হক, মাহমুদুল ইসলাম ও এম আমীর-উল ইসলাম।
সামরিক আদালতে দণ্ডিতদের জন্য 'সুখবর'
রায়ের পর সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ের পর এরশাদের সামরিক আদালতে সাজাপ্রাপ্তদের জন্য আদালতের দরজা খুলে গেলো। তারা এখন আদালতে এসে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন।
"তবে তারা মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন না। সাধারণ আদালতে তাদের মামলা চলবে", বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, আশা করছি, হালিমা খাতুন মামলাসহ আরো কয়েকটি মামলায় সামরিক শাসনের পক্ষে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়গুলো এখন রিভিউ করা হবে।
এরশাদকে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে বলে হাইকোর্টের রায়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাহবুবে আলম বলেন, এ বিষয়ে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পেলে আদালতের নির্দেশনা বোঝা যাবে।
সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ই বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে রিট আবেদনকারী সিদ্দিক আহমেদকে সামরিক আদালতে দেওয়া সাজাও বাতিল হয়েছে।
সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ওপর রোববার এ রায় দেয় প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারকের বেঞ্চ।
এরশাদের সামরিক শাসনের সময় একটি হত্যামামলায় সামরিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিক আহমেদের রিট আবেদনে হাইকোর্ট ২০১০ সালের ২৬ অগাস্ট সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে।
তবে রায়ে সিদ্দিকের সাজা বহাল থাকায় তিনি হাইকোর্টের রায়ের অংশ বিশেষের বিরুদ্ধে এ বছরের ১১ এপ্রিল আপিল করেন। শুনানি শেষে রোববার রায় হলো। তার আপিল আংশিক মঞ্জুর হয়েছে। সামরিক আদালতে তার সাজা বাতিল হলেও মামলা বাতিল করেনি আপিল বিভাগ।
রায়ে আপিল বিভাগ এরশাদের শাসনামলের ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত জারি করা সব সামরিক ফরমান, আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছে। তবে ওই সময়কালের কিছু বিষয় শর্ত সাপেক্ষে মার্জনা করা হয়েছে। বহাল রাখা হয়েছে রাষ্ট্রের পক্ষে করা সব চুক্তি।
রায়ে বলা হয়, সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা বহাল রাখা হলো। সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের প্যারাগ্রাফ-১৯ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হলো।
রায়ের পর আপিলকারীর আইনজীবী সৈয়দ আমিরুল ইসলাম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, এর ফলে এরশাদের সামরিক শাসন অবৈধই থাকলো।
কী শর্তে বিভিন্ন বিষয় মার্জনা করা হলো- জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত এ বিচারপতি বলেন, "যে সব কাজ পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে, সেগুলো পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজ। অর্থাৎ কাউকে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে, সে ইতোমধ্যে সেই সাজা ভোগ করেছে। তাহলে তা পাস্ট এন্ড ক্লোজ হিসাবে মার্জনা করা হয়েছে।"
হাইকোর্টের রায়ে সিদ্দিককে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিলো।
সিদ্দিকের অন্য আইনজীবী হাসান এসএম আজিম সাংবাদিকদের জানান, তার মক্কেল গত ৪ এপ্রিল চট্টগ্রামের জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
আমিরুল বলেন, "রায়ে বলা হয়েছে, সামরিক আদালতে স্থানান্তরের পূর্বের অবস্থা থেকে সিদ্দিক আহমেদের মামলার কার্যক্রম আবার শুরু হবে।"
মামলা বাতিলে সিদ্দিকের আবেদন নাকচ হলেও তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে আপিল বিভাগ। রায়ে বলা হয়েছে, বিচারিক আদালতে বিচার শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ জামিন কার্যকর থাকবে। বিচার শুরুর পর তা ওই আদালতের বিচারকের ওপর নির্ভর করবে।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছিলো, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের জারি করা সামরিক শাসন, এর পর থেকে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত জারি করা সব সামরিক আদেশ, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের আদেশ, সামরিক আইন আদেশ ও সামরিক আইন-নির্দেশ অবৈধ।
তবে বিশৃঙ্খলা এড়ানোর জন্য পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়ের আলোকে এরশাদের আমলের কর্মকাণ্ডকে মার্জনা করে আদালত।
এর আগে জিয়াউর রহমানের সময়ের সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীও বাতিল করে উচ্চ আদালত।
সপ্তম সংশোধনীর বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ে আরো বলা হয়, "ভবিষ্যতে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল রোধ করার জন্য সংসদ অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর শাস্তি নির্ধারণ করতে পারবে।"
"খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবু সা'দাত মোহাম্মদ সায়েম এবং জিয়াউর রহমানের মতো এইচএম এরশাদও অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী। তার এ কাজকে মার্জনা করা যেতে পারে না। অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী হিসেবে এরশাদ তার দায় এড়াতে পারেন না", বলে হাইকোর্ট।
আপিলের শুনানিতে সর্বোচ্চ আদালত আদালত-বন্ধু (অ্যামিকাস কিউরি) হিসেবে তিন জনের বক্তব্য শোনে। তারা হলেন- রফিক উল হক, মাহমুদুল ইসলাম ও এম আমীর-উল ইসলাম।
সামরিক আদালতে দণ্ডিতদের জন্য 'সুখবর'
রায়ের পর সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ের পর এরশাদের সামরিক আদালতে সাজাপ্রাপ্তদের জন্য আদালতের দরজা খুলে গেলো। তারা এখন আদালতে এসে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন।
"তবে তারা মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন না। সাধারণ আদালতে তাদের মামলা চলবে", বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, আশা করছি, হালিমা খাতুন মামলাসহ আরো কয়েকটি মামলায় সামরিক শাসনের পক্ষে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়গুলো এখন রিভিউ করা হবে।
এরশাদকে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে বলে হাইকোর্টের রায়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাহবুবে আলম বলেন, এ বিষয়ে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পেলে আদালতের নির্দেশনা বোঝা যাবে।
0 comments:
Thanks for Comment