তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, তবে...
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে এর আওতায় আগামী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে মত দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত আরো বলেছে, বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বাদ রেখে সংসদ এ সরকার পদ্ধতি সংস্কার করতে পারে।
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংক্রান্ত আপিলের শুনানি শেষে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এবিএম, খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে এ রায় এসেছে।
রায়ের পর সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আদালত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছেন। তবে বলেছেন, শান্তিশৃঙ্খলা ও ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আগামী দুটি সাধারণ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে। একই সঙ্গে বিচার বিভাগকে এর সঙ্গে না জড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।"
অ্যাটর্নি জেনারেল পরে সাংবাদিকদের বলেন, "আগামী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যাবে। তবে এরপর তা করা যাবে না। এর মধ্যেই সংবিধান সংশোধন করতে হবে।"
আপিলকারীর আইনজীবী এমআই ফারুকী রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, "এটা সংবিধান ও জনগণের জন্য ভালো হলো। আমরা সংবিধান রক্ষা করতে পেরেছি। নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হওয়াই বাঞ্ছনীয়। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও তা হচ্ছে।"
"তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কার্যত সামরিক আইনেরই আরেক রূপ। সামরিক আইন এলে সংবিধানের কিছু ধারা স্থগিত করা হয়, যা জিয়ার সময় ও পাকিস্তান আমলে আমরা দেখেছি। তেমনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলেও সংবিধানের কিছু ধারা স্থগিত হয়ে পড়ে", বলেন তিনি।
হাইকোর্টের পর আপিল বিভাগে বাদি
ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজনের রিট আবেদনে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ বলে ঘোষণা করে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় রিট আবেদনকারী পক্ষ।
সলিম উল্লাহ মারা যাওয়ায় এবং অন্য আবেদনকারী রুহুল কুদ্দুস বাবু হাইকোর্টের বিচারক হওয়ায় বর্তমানে মো. আব্দুল মান্নান খান এ রিট আবেদনের বাদি হিসাবে রয়েছেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মান্নান খান সাংবাদিকদের বলেন, "রায়ে খুশি হয়েছি। দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হলেও বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বাদ রেখে সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা সংসদকে দিয়েছে।"
আপিল বিভাগে গত ১ মার্চ আপিলের শুনানি শুরু হয়, শেষ হয় ৬ এপ্রিল।
দুই পক্ষের রাজনীতিকের দুই মত
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ বলেছেন, এটি রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি করতে পারে। একই মত প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোন্দকার মাহবুব হোসেনও।
সংশোধনী বাতিল করে আবার তার আওতায় গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দুটি নির্বাচনের মতকে পরস্পরবিরোধী বলে অভিহিত করেছেন তারা।
অন্যদিকে রায়ের প্রশংসা করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সংবিধান সংশোধনে গঠিত সংসদীয় বিশেষ কমিটির কো-চেয়ারম্যান বলেছেন, পূর্ণাঙ্গ রায় বিবেচনায় নেবেন তারা।
সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বামপন্থী নেতা রাশেদ খান মেনন ও মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে যোগ করা হয়। এরপর থেকে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষে এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়ে পরবর্তী সরকার গঠিত হচ্ছে।
আইনজীবীদেরও ভিন্নমত
আপিলের শুনানিতে সর্বোচ্চ আদালত অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে কামাল হোসেন, টিএইচ খান, রফিক উল হক, এম জহির, মাহমুদুল ইসলাম, আমীর উল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসির বক্তব্য শুনেছে।
প্রবীণ আইনজীবী রফিক উল হক বলেন, রায়টি কিছুটা স্ববিরোধী। কারণ একদিকে বলা হয়েছে, ১৩তম সংশোধনী আজ থেকেই অবৈধ। আবার বলা হয়েছে, আগামী দুই নির্বাচন এই ব্যবস্থার অধীনে হতে পারে।
"বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় হয়তবা এটা করা হয়েছ্"ে
ড. এম জহির বলেন, "সুন্দর রায় হয়েছে। আমরা বার বার বলেছি, বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বাইরে রাখতে। রায়ে আমাদের বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে।"
"এই রায়ের ফলে আগামী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে হবে। এ ব্যবস্থায় বিচারপতিদের না জড়ানোর বিষয়ে সংসদ আইন করতে পারবে।"
ব্যরিস্টার মো. আমীর উল ইসলাম বলেন, "এই রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প বের করার দায়িত্ব পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর উপর। তাই সংকট এড়াতে তাদেরকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
"এজন্য সরকার ও বিরোধী দলের সহযোগিতা প্রয়োজন্"
তিনি বলেন, "তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিকল্প খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হলে ওই গুরু দায়িত্ব সাবেক প্রধান বিচারপতির ওপরই বর্তাবে।"
ব্যরিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, "এই রায়ের পর ১৩তম সংশোধনীর আর কোন বৈধতা থাকলো না। তবে আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে।"
"এই ব্যবস্থায় বিচারপতিদের না রাখার কথা বলেছে আদালত। তবে নির্দেশের মানার বাধ্যবাধকতা সংসদের নেই। সংসদ চাইলে মানতে পারে। আবার উপেক্ষাও করতে পারে।"
রিট আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিলো- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাষ্ট্রের প্রজাতান্ত্রিক চরিত্রকে নষ্ট করেছে। তারা এ ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণার আবেদন করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পূর্বাপর
দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির সাংবিধানিক স্বীকৃতি ১৯৯৬ সালে এলেও ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতনের পর অন্তর্র্বতীকালীন একটি সরকারের অধীনে হয় সাধারণ নির্বাচন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের চাপে অনীহা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনে সংবিধান সংশোধন করে বিএনপি।
২০০৬ সালে রাজনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে জরুরি অবস্থা জারির পর গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর ক্ষমতায় থাকার পর এ পদ্ধতির দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
বর্তমানে সংবিধান সংশোধনের যে প্রক্রিয়া চলছে, তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ সুনির্দিষ্ট করার সুপারিশ আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাব করেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৩ মাস মেয়াদে নির্বাচন করতে না পারলে আগের সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান যোগ করতে।
অ্যামিকাস কিউরিয়াদের মধ্যে অধিকাংশই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষেই বক্তব্য রাখেন। তবে আজমালুল হোসেন কিউসি বক্তব্য রাখেন বিপক্ষে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির সমালোচনা করে এলেও বিএনপি ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, এ ব্যবস্থা বাতিল হলে আন্দোলনে নামবে তারা।
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংক্রান্ত আপিলের শুনানি শেষে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এবিএম, খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে এ রায় এসেছে।
রায়ের পর সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আদালত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছেন। তবে বলেছেন, শান্তিশৃঙ্খলা ও ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আগামী দুটি সাধারণ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে। একই সঙ্গে বিচার বিভাগকে এর সঙ্গে না জড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।"
অ্যাটর্নি জেনারেল পরে সাংবাদিকদের বলেন, "আগামী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যাবে। তবে এরপর তা করা যাবে না। এর মধ্যেই সংবিধান সংশোধন করতে হবে।"
আপিলকারীর আইনজীবী এমআই ফারুকী রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, "এটা সংবিধান ও জনগণের জন্য ভালো হলো। আমরা সংবিধান রক্ষা করতে পেরেছি। নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হওয়াই বাঞ্ছনীয়। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও তা হচ্ছে।"
"তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কার্যত সামরিক আইনেরই আরেক রূপ। সামরিক আইন এলে সংবিধানের কিছু ধারা স্থগিত করা হয়, যা জিয়ার সময় ও পাকিস্তান আমলে আমরা দেখেছি। তেমনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলেও সংবিধানের কিছু ধারা স্থগিত হয়ে পড়ে", বলেন তিনি।
হাইকোর্টের পর আপিল বিভাগে বাদি
ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজনের রিট আবেদনে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ বলে ঘোষণা করে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় রিট আবেদনকারী পক্ষ।
সলিম উল্লাহ মারা যাওয়ায় এবং অন্য আবেদনকারী রুহুল কুদ্দুস বাবু হাইকোর্টের বিচারক হওয়ায় বর্তমানে মো. আব্দুল মান্নান খান এ রিট আবেদনের বাদি হিসাবে রয়েছেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মান্নান খান সাংবাদিকদের বলেন, "রায়ে খুশি হয়েছি। দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হলেও বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বাদ রেখে সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা সংসদকে দিয়েছে।"
আপিল বিভাগে গত ১ মার্চ আপিলের শুনানি শুরু হয়, শেষ হয় ৬ এপ্রিল।
দুই পক্ষের রাজনীতিকের দুই মত
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ বলেছেন, এটি রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি করতে পারে। একই মত প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোন্দকার মাহবুব হোসেনও।
সংশোধনী বাতিল করে আবার তার আওতায় গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দুটি নির্বাচনের মতকে পরস্পরবিরোধী বলে অভিহিত করেছেন তারা।
অন্যদিকে রায়ের প্রশংসা করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সংবিধান সংশোধনে গঠিত সংসদীয় বিশেষ কমিটির কো-চেয়ারম্যান বলেছেন, পূর্ণাঙ্গ রায় বিবেচনায় নেবেন তারা।
সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বামপন্থী নেতা রাশেদ খান মেনন ও মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে যোগ করা হয়। এরপর থেকে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষে এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়ে পরবর্তী সরকার গঠিত হচ্ছে।
আইনজীবীদেরও ভিন্নমত
আপিলের শুনানিতে সর্বোচ্চ আদালত অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে কামাল হোসেন, টিএইচ খান, রফিক উল হক, এম জহির, মাহমুদুল ইসলাম, আমীর উল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসির বক্তব্য শুনেছে।
প্রবীণ আইনজীবী রফিক উল হক বলেন, রায়টি কিছুটা স্ববিরোধী। কারণ একদিকে বলা হয়েছে, ১৩তম সংশোধনী আজ থেকেই অবৈধ। আবার বলা হয়েছে, আগামী দুই নির্বাচন এই ব্যবস্থার অধীনে হতে পারে।
"বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় হয়তবা এটা করা হয়েছ্"ে
ড. এম জহির বলেন, "সুন্দর রায় হয়েছে। আমরা বার বার বলেছি, বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বাইরে রাখতে। রায়ে আমাদের বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে।"
"এই রায়ের ফলে আগামী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে হবে। এ ব্যবস্থায় বিচারপতিদের না জড়ানোর বিষয়ে সংসদ আইন করতে পারবে।"
ব্যরিস্টার মো. আমীর উল ইসলাম বলেন, "এই রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প বের করার দায়িত্ব পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর উপর। তাই সংকট এড়াতে তাদেরকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
"এজন্য সরকার ও বিরোধী দলের সহযোগিতা প্রয়োজন্"
তিনি বলেন, "তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিকল্প খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হলে ওই গুরু দায়িত্ব সাবেক প্রধান বিচারপতির ওপরই বর্তাবে।"
ব্যরিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, "এই রায়ের পর ১৩তম সংশোধনীর আর কোন বৈধতা থাকলো না। তবে আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে।"
"এই ব্যবস্থায় বিচারপতিদের না রাখার কথা বলেছে আদালত। তবে নির্দেশের মানার বাধ্যবাধকতা সংসদের নেই। সংসদ চাইলে মানতে পারে। আবার উপেক্ষাও করতে পারে।"
রিট আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিলো- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাষ্ট্রের প্রজাতান্ত্রিক চরিত্রকে নষ্ট করেছে। তারা এ ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণার আবেদন করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পূর্বাপর
দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির সাংবিধানিক স্বীকৃতি ১৯৯৬ সালে এলেও ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতনের পর অন্তর্র্বতীকালীন একটি সরকারের অধীনে হয় সাধারণ নির্বাচন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের চাপে অনীহা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনে সংবিধান সংশোধন করে বিএনপি।
২০০৬ সালে রাজনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে জরুরি অবস্থা জারির পর গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর ক্ষমতায় থাকার পর এ পদ্ধতির দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
বর্তমানে সংবিধান সংশোধনের যে প্রক্রিয়া চলছে, তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ সুনির্দিষ্ট করার সুপারিশ আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাব করেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৩ মাস মেয়াদে নির্বাচন করতে না পারলে আগের সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান যোগ করতে।
অ্যামিকাস কিউরিয়াদের মধ্যে অধিকাংশই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষেই বক্তব্য রাখেন। তবে আজমালুল হোসেন কিউসি বক্তব্য রাখেন বিপক্ষে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির সমালোচনা করে এলেও বিএনপি ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, এ ব্যবস্থা বাতিল হলে আন্দোলনে নামবে তারা।
0 comments:
Thanks for Comment