আলস্যের জন্য দায়ী জিন শনাক্ত

একদল মানুষ বেশি কাজ করে বা করতে পারে। আবার এক দলের রয়েছে কাজের প্রতি অনীহা। তুলনামূলক কম কর্মক্ষম এসব মানুষকে অলসও বলা হয়ে থাকে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অলস বা কর্মঠ হওয়ার বিষয়টি অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন কলেজের একদল গবেষক বলছেন ভিন্ন কথা। তাঁদের দাবি, আলস্যের কারণটি জিনগত। ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা এমন জিন খুঁজে পেয়েছেন। জিন হচ্ছে জীবের বংশগতির একক, যার মাধ্যমে জীবের বৈশিষ্ট্য এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়।
গবেষক দলের সদস্য মাইকেল রবার্টস ও তাঁর সহযোগীরা বলছেন, মানবদেহে একই ধরনের জিন রয়ে
ছে কি না, অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে। এতে মানুষের স্থূলতা ও কাজে অনীহার কারণও জানার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁদের গবেষণা নিবন্ধটি আমেরিকান জার্নাল অব সাইকোলজি: রেগুলেটরি, ইন্টিগ্রেটিভ অ্যান্ড কমপারেটিভ সাইকোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় ৫২টি ইঁদুরকে দৌড়ানোর উপযোগী একটি খাঁচায় রাখা হয়। সেখানে টানা ছয় দিনব্যাপী ইঁদুরগুলোর দৌড়ানোর হার পরিমাপ করা হয়। এর মধ্যে দৌড়ে সেরা প্রথম ২৬টি ‘পরিশ্রমী’ ইঁদুরকে একটি দলে নেওয়া হয়। অপর ২৬টি ‘অলস’ ইঁদুরকে আরেকটি দলে আলাদা করা হয়। দৌড়ে সেরা যুগলদের মধ্যে সংকর প্রজনন ঘটানো হয়। ‘অলস’ যুগলদের মধ্যে একই প্রক্রিয়ায় প্রজনন ঘটানো হয়। ফলাফলে দেখা যায়, প্রথম দলটি দ্বিতীয় দলটির চেয়ে দশ গুণ বেশি কর্মঠ এবং উভয় দলের ইঁদুরের মধ্যে জিনগত পার্থক্য রয়েছে।
মাইকেল রবার্টস বলেন, ইঁদুরের শারীরিক কর্মকাণ্ডে উদ্দীপনার জন্য দায়ী অন্তত এক হাজার ৭০০টি ভিন্ন জিনের মধ্যে ৩৬টি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। অবশ্য এসব ইঁদুরের শারীরিক গঠন ও পেশিকোষের মধ্যে খুবই কম পার্থক্য ধরা পড়েছে। ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক গ্রেগরি স্টেইনবার্গ বলেন, সাধারণ ইঁদুরেরা মাইলের পর মাইল দৌড়াতে পারে। কিন্তু নির্দিষ্ট এক ধরনের জিনের অভাবে কিছু ইঁদুর অল্প দূরত্ব দৌড়েই অব্যাহতি নেয়।

0 comments:

Thanks for Comment

Copyright © 2013 MEDIA INFO