রক্ত দিন, নিজে বাঁচুন, অপরকেও বাঁচান

জীবন বাঁচাতে এক ব্যাগ রক্তের মূল্য যে কতখানি তা শুধু জানেন ভুক্তভোগীরাই। আমাদের দেশে সব সময়ই রক্তের স্বল্পতা বিরাজ করে, রক্তদাতাদের অপ্রতুলতাই এর ‍প্রধানতম কারণ।

আসলে রক্তদান সম্পর্কে অনেকের মনেই এক ধরণের অহেতুক ভীতি বা সঙ্কোচ কাজ করে। তবে রক্তদান কোনো কঠিন বা দুঃসাহসের কাজ নয়। ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যেকোনো সুস্থ, রোগহীন মানুষ (পুরুষের ক্ষেত্রে ওজন কমপক্ষে ৪৮ কেজি, মেয়েদের ক্ষেত্রে ৪৫ কেজি) প্রতি চার মাস পরপর এক ব্যাগ করে রক্ত এমনিতেই দিতে পারেন। এতে রক্তদাতার শারীরিক ক্ষতি বা অসুস্থতার কোনো সম্ভাবনা নেই।

রক্ত দেওয়ার জন্য আলাদা কোনো খাদ্যাভ্যাস বা জীবন প্রণালী অনুসরণেরও প্রয়োজন নেই। স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া আর জীবন যাপনই যথেষ্ট।

তবে রক্তদানের আগে ও পরে পানি পান করা যেতে পারে। এছাড়া রক্তদানের পর একটুখানি বিশ্রামও শরীরের জন্য উপকারী। এরপরপরই রক্তদাতারা তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন, কোনো অসুবিধাই নেই।

একজন মানুষের শরীরে সাড়ে ৫ থেকে ৬ লিটার রক্ত থাকে। আর এক ব্যাগ থাকে ৩৫০ থেকে ৪৫০ মিলিলিটার সমপরিমাণ রক্ত।

দান করা রক্তের প্লাজমা বা রক্তরসের অভাব পূরণ হয়ে যায় বেশি বেশি পানি পানের মাধ্যমেই। আর রক্তের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান লোহিত কণিকা ১২০ দিন পরপর মানুষের শরীরে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই প্রতিস্থাপিত হয়। অর্থাৎ কেউ রক্ত দিক বা না দিক, পুরনো লোহিত কণিকাগুলো মরে গিয়ে ১২০ দিন পরপর মানুষের শরীরে নতুন লোহিত কণিকা জন্ম নেয়।

বিশুদ্ধ রক্ত পাওয়ার জন্য মানুষ দ্বারস্থ হয় সন্ধানী, রেড ক্রিসেন্ট, বাঁধন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন প্রভৃতি সংগঠনের। স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের দান করা রক্তের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় এসব সংগঠন। মানুষ যত বেশি রক্ত দেবে, তত বেশি বিশুদ্ধ রক্তের ব্যবস্থা করার সক্ষমতা অর্জন করবে এসব সংগঠনও ।

তাই স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসুন। আপনার অন্তত এক ব্যাগ রক্ত দানে বেঁচে যেতে পারে একটি সম্ভাবনাময় প্রাণ।
- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

0 comments:

Thanks for Comment

Copyright © 2013 MEDIA INFO