মুসলমানের সন্তানরা কী শিখছে : পাঠ্যপুস্তকে ইসলামের অবমাননা
নিউজবিএনএন ডেস্ক: একটি মুসলিমপ্রধান দেশের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামি শিক্ষা ও মূল্যবোধের চর্চা থাকবে এটাই ছিল যৌক্তিকভাবে প্রত্যাশিত। যে শিক্ষা ও সভ্যতা আমাদের জাতিকে অন্যান্য জাতি থেকে পৃথক সত্তায় এবং আলাদা বৈশিষ্ট্যে চিহ্নিত করে আর উন্নত মানবিক গুণাবলিতে সমৃদ্ধ করে সে শিক্ষাই হওয়ার কথা ছিল আমাদের জাতীয় শিক্ষা। কিন্তু আজ আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির শিক্ষা ব্যবস্থায় এ কী অসহনীয় বাস্তবতা লক্ষ্য করছি। এসব কীসের আলামত? এ শিক্ষায় ধর্মীয় জ্ঞান ও মূল্যবোধের চর্চা তো দূরের কথা বরং শিক্ষার সব পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে ধর্মের প্রতি অবমাননা আর ধর্মবিদ্বেষের বিষাক্ত বীজ। বিকৃত করা হয়েছে ইসলামের আলোকিত ইতিহাস এবং চরিত্রহনন করা হয়েছে ইতিহাসের আলোচিত মুসলিম শাসকদের। প্রাথমিক স্তর থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সর্বস্তরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে বিকৃত ইতিহাস আর ধর্মের প্রতি অবমাননামূলক নানা বিষয়। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য থেকে এবং পাঠ্যপুস্তকে অনুসন্ধান চালিয়ে আমরা ইসলাম অবমাননার যে ভয়াবহ চিত্র পেয়েছি, শিক্ষার সব স্তর থেকে এ নিবন্ধে তার এক-একটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো :
প্রাথমিক স্তর : পঞ্চম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার ৫৮নং পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ‘ইসলাম এত উদার যে মহানবী (সা.) ইয়াহুদি খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের মদিনা মসজিদে ইবাদত করার সুযোগ করে দিয়েছেন। [দৈনিক আমার দেশ ১৬.৩.২০১৩ইং]
পাঠ্যপুস্তকের এহেন অসত্য বক্তব্যের মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসকেই শুধু বিকৃত করা হয়নি, বরং ইসলামের অপরিহার্য আকিদা বিশ্বাসের মূলেও আঘাত করা হয়েছে। কারণ মহানবী (সা.) ইয়াহুদি খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের মদিনা মসজিদে ইবাদত করার সুযাগ করে দেয়ার বক্তব্যের অর্থ দাঁড়ায় তিনি এদের বাতিল ধর্মকেও ইসলামের মতোই সত্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন (নাউজুবিল্লাহ)। অথচ মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘নিঃসন্দেহে ইসলামই আল্লাহর কাছে একমাত্র ধর্ম’ [আলে ইমরান, আয়াত : ১৯] অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনও কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত (আলে ইমরান : ৮৫)। তাহলে ইসলামের ইতিহাস বিকৃত করার মাধ্যমে এর একটি মৌলিক ও অপরিহার্য আকিদার বিষয়ে তরলমতি শিশুদের মনে সংশয় ঈমান আকিদা নষ্ট করার চেষ্টার পেছনে উদ্দেশ্য কী তা ভেবে দেখা দরকার।
মাধ্যমিক স্তর : নবম শ্রেণীতে পাঠ্য ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ বইয়ে দেবদেবীকে মহান আল্লাহর সমমর্যাদায় এনে দেবদেবীর নামে উত্সর্গীকৃত পশু খাওয়াকে হালাল বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। বইটির—৮২নং পৃষ্ঠায় ‘হালাল হারাম’ অংশে হারাম খাদ্য ও দ্রব্যের তালিকায় ৫ নম্বরে লেখা হয়েছে ‘দেবদেবীর বা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে উত্সর্গীকৃত পশুর গোশত (খাওয়া হারাম)। তার মানে স্পষ্টত এই দাঁড়ায় যে দেবদেবীরাও মহান আল্লাহর সমপর্যায়ের (নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক)। এ বক্তব্যের
মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহর সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে শিরক করা হয়েছে যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করা ক্ষমা করেন না। এছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যে কেউ আল্লাহর শরিক করে সে এক মহাপাপ করে।’ [সুরা নিসা, আয়াত নং ৪৮]। ন্যূনতম ধর্মীয়
জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তিও জানেন যে দেবদেবীর নামে উত্সর্গীকৃত পশুর গোশত সম্পূর্ণরূপে হারাম। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ এ প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় তিনি তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জীব, রক্ত, শূকরের গোশত এবং যেসব জীবজন্তু যা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে উত্সর্গ করা হয়’ [সুরা বাকারা, আয়াত ১৭৩] উল্লেখ্য যে পাঠ্যপুস্তকে মহান আল্লাহর এহেন অবমাননার বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় তুলে ধরার পর এই গুরুতর অপরাধে জড়িতদের কোনো বিচার হয়েছে বলে আজ পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় শুধু তথ্য বিবরণীর মাধ্যমে এর একটি সংশোধনী জারি করে। একটি মুসলিম প্রধান দেশে মুসলমানদের অর্থে পরিচালিত শিক্ষার পাঠ্যপুস্তকে এমন ভয়াবহ ইসলাম অবমাননার বিষয়টি কী করে ঘটল সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গেল।
সর্বোচ্চ স্তর : সাধারণ শিক্ষার সর্বোচ্চ পর্যায়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকেও রয়েছে ধর্মবিদ্বেষের বিষাক্ত বীজ। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত সর্বশেষ সংস্করণেও তা বাদ দেয়া হয়নি। স্নাতক শ্রেণীর বাংলা (আবশ্যিক) বইয়ের দুটি লেখায় এই অবমাননা চোখে পড়েছে। একটি লেখার শিরোনাম হচ্ছে ‘সংস্কৃতি কথা’ আর অপরটির নাম ‘হুজুর কেবলা’। সংস্কৃতি কথা প্রবন্ধটিতে লেখক দাবি করেন ধর্ম হচ্ছে সাধারণ লোকের কালচার। মার্জিত আলোকপ্রাপ্তদের জন্য ধর্মের এতটা দরকার হয় না। বরং তাদের ওপর ধর্মের নীতি চাপাতে গেলে ক্ষতি হয়।’ (এবং তাদের আত্মা নষ্ট হয়ে যায়)। দার্শনিক শ’র উক্তি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যার আকাশে তাঁর সম্বন্ধে সাবধান’। এর কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লেখক বলেন, ‘কেননা তার দ্বারা যে কোনো অন্যায় ও নিষ্ঠুর কাজ হতে পারে’ কতদূর এগিয়ে লেখক ধর্মাশ্রয়ীদের সম্পর্কে তার মূল্যায়ন তুলে ধরেন এভাবে ‘ইহকাল ও পরকালে সর্বত্রই একটা ইতর লোভ।’ আর ‘হুজুর কেবলা’ গল্পটিতে বাহ্যত একজন ভণ্ড পীরের মুখোশ উন্মোচনের চেষ্টা করা হয়েছে—বোঝানো হলেও এর বিভিন্ন অংশজুড়ে রয়েছে আমাদের প্রিয় ধর্মের প্রতি চরম কটাক্ষপাত ও অবমাননা। গল্পকার এ গল্পে নবীজির (সা.) প্রসঙ্গ এনে এমন এমন কুরুচিপূর্ণ সংলাপ চালিয়েছেন যা পাঠ করলে একজন সামান্য মুসলমানের হৃদয়ও কেঁপে ওঠে। এতে দেখানো হয়েছে যে হুজুর (সা.) আত্মিকভাবে উপস্থিত হয়ে একজন বয়োবৃদ্ধ ভণ্ডপীরকে তাঁর এক যুবক মুরিদের যুবতী স্ত্রীকে বিবাহ করার নির্দেশ দিচ্ছেন এবং সেমতে ওই পীর (হুজুর কেবলা) অনিচ্ছা সত্ত্বেও উম্মতের কল্যাণ চিন্তায় ওই বিবাহিতা যুবতীকে শরিয়তের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বিবাহ করছেন। পুরো বিষয়টাকে অত্যন্ত নোংরাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে—একটি মুসলিম প্রধান দেশের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বস্তরে ধর্মের এহেন অবমাননা ও ধর্মবিদ্বেষের এমন বিষাক্ত বীজ কারা ঢুকিয়ে দিচ্ছে এবং কারা ওদের সহযোগিতা ও প্রশ্রয় দিচ্ছে। মূলত এহেন শিক্ষাই আমাদের জাতির নৈতিক মেরুদণ্ড প্রতিনিয়ত ভেঙে দিচ্ছে এবং সমাজে অনৈতিকতা, ধর্মদ্রোহিতা ও নবী বিদ্বেষের ঝড় বইয়ে দিচ্ছে। মুসলমানের সন্তানরা শিক্ষার নামে কী বিষ গিলছে! পাঠ্যপুস্তকের বাইরে নানাভাবে পবিত্র কোরআন, মহান আল্লাহ ও তাঁর মহান রাসুল (সা.)-এর অবমাননা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহান আল্লাহ, রাসুল (সা.) পবিত্র কোরআন ও ইসলামের বিরুদ্ধে এক-একটি ভয়ঙ্কর হামলা চালানো হবে আর ধরা পড়ার পর এবং মুসলিম জনতার হৃিপণ্ডে রক্তক্ষরণ শুরু হওয়ার পর আয়েশিভঙ্গিতে ‘স্যরি’ বলে দেয়া হবে, একটি মুসলিম দেশ তো এভাবে চলতে পারে না। অন্যায় হত্যাকাণ্ডের পর মুখে ‘স্যরি’ বলে দিলেই কি ল্যাঠা চুকে যায়? অপরাধীর দায় শেষ হয়ে যায়। বিষয়টি আমাদের বুঝতে হবে এবং সে হিসেবে কর্তব্য স্থির করতে হবে।
প্রাথমিক স্তর : পঞ্চম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার ৫৮নং পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ‘ইসলাম এত উদার যে মহানবী (সা.) ইয়াহুদি খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের মদিনা মসজিদে ইবাদত করার সুযোগ করে দিয়েছেন। [দৈনিক আমার দেশ ১৬.৩.২০১৩ইং]
পাঠ্যপুস্তকের এহেন অসত্য বক্তব্যের মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসকেই শুধু বিকৃত করা হয়নি, বরং ইসলামের অপরিহার্য আকিদা বিশ্বাসের মূলেও আঘাত করা হয়েছে। কারণ মহানবী (সা.) ইয়াহুদি খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের মদিনা মসজিদে ইবাদত করার সুযাগ করে দেয়ার বক্তব্যের অর্থ দাঁড়ায় তিনি এদের বাতিল ধর্মকেও ইসলামের মতোই সত্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন (নাউজুবিল্লাহ)। অথচ মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘নিঃসন্দেহে ইসলামই আল্লাহর কাছে একমাত্র ধর্ম’ [আলে ইমরান, আয়াত : ১৯] অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনও কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত (আলে ইমরান : ৮৫)। তাহলে ইসলামের ইতিহাস বিকৃত করার মাধ্যমে এর একটি মৌলিক ও অপরিহার্য আকিদার বিষয়ে তরলমতি শিশুদের মনে সংশয় ঈমান আকিদা নষ্ট করার চেষ্টার পেছনে উদ্দেশ্য কী তা ভেবে দেখা দরকার।
মাধ্যমিক স্তর : নবম শ্রেণীতে পাঠ্য ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ বইয়ে দেবদেবীকে মহান আল্লাহর সমমর্যাদায় এনে দেবদেবীর নামে উত্সর্গীকৃত পশু খাওয়াকে হালাল বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। বইটির—৮২নং পৃষ্ঠায় ‘হালাল হারাম’ অংশে হারাম খাদ্য ও দ্রব্যের তালিকায় ৫ নম্বরে লেখা হয়েছে ‘দেবদেবীর বা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে উত্সর্গীকৃত পশুর গোশত (খাওয়া হারাম)। তার মানে স্পষ্টত এই দাঁড়ায় যে দেবদেবীরাও মহান আল্লাহর সমপর্যায়ের (নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক)। এ বক্তব্যের
মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহর সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে শিরক করা হয়েছে যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করা ক্ষমা করেন না। এছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যে কেউ আল্লাহর শরিক করে সে এক মহাপাপ করে।’ [সুরা নিসা, আয়াত নং ৪৮]। ন্যূনতম ধর্মীয়
জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তিও জানেন যে দেবদেবীর নামে উত্সর্গীকৃত পশুর গোশত সম্পূর্ণরূপে হারাম। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ এ প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় তিনি তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জীব, রক্ত, শূকরের গোশত এবং যেসব জীবজন্তু যা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে উত্সর্গ করা হয়’ [সুরা বাকারা, আয়াত ১৭৩] উল্লেখ্য যে পাঠ্যপুস্তকে মহান আল্লাহর এহেন অবমাননার বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় তুলে ধরার পর এই গুরুতর অপরাধে জড়িতদের কোনো বিচার হয়েছে বলে আজ পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় শুধু তথ্য বিবরণীর মাধ্যমে এর একটি সংশোধনী জারি করে। একটি মুসলিম প্রধান দেশে মুসলমানদের অর্থে পরিচালিত শিক্ষার পাঠ্যপুস্তকে এমন ভয়াবহ ইসলাম অবমাননার বিষয়টি কী করে ঘটল সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গেল।
সর্বোচ্চ স্তর : সাধারণ শিক্ষার সর্বোচ্চ পর্যায়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকেও রয়েছে ধর্মবিদ্বেষের বিষাক্ত বীজ। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত সর্বশেষ সংস্করণেও তা বাদ দেয়া হয়নি। স্নাতক শ্রেণীর বাংলা (আবশ্যিক) বইয়ের দুটি লেখায় এই অবমাননা চোখে পড়েছে। একটি লেখার শিরোনাম হচ্ছে ‘সংস্কৃতি কথা’ আর অপরটির নাম ‘হুজুর কেবলা’। সংস্কৃতি কথা প্রবন্ধটিতে লেখক দাবি করেন ধর্ম হচ্ছে সাধারণ লোকের কালচার। মার্জিত আলোকপ্রাপ্তদের জন্য ধর্মের এতটা দরকার হয় না। বরং তাদের ওপর ধর্মের নীতি চাপাতে গেলে ক্ষতি হয়।’ (এবং তাদের আত্মা নষ্ট হয়ে যায়)। দার্শনিক শ’র উক্তি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যার আকাশে তাঁর সম্বন্ধে সাবধান’। এর কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লেখক বলেন, ‘কেননা তার দ্বারা যে কোনো অন্যায় ও নিষ্ঠুর কাজ হতে পারে’ কতদূর এগিয়ে লেখক ধর্মাশ্রয়ীদের সম্পর্কে তার মূল্যায়ন তুলে ধরেন এভাবে ‘ইহকাল ও পরকালে সর্বত্রই একটা ইতর লোভ।’ আর ‘হুজুর কেবলা’ গল্পটিতে বাহ্যত একজন ভণ্ড পীরের মুখোশ উন্মোচনের চেষ্টা করা হয়েছে—বোঝানো হলেও এর বিভিন্ন অংশজুড়ে রয়েছে আমাদের প্রিয় ধর্মের প্রতি চরম কটাক্ষপাত ও অবমাননা। গল্পকার এ গল্পে নবীজির (সা.) প্রসঙ্গ এনে এমন এমন কুরুচিপূর্ণ সংলাপ চালিয়েছেন যা পাঠ করলে একজন সামান্য মুসলমানের হৃদয়ও কেঁপে ওঠে। এতে দেখানো হয়েছে যে হুজুর (সা.) আত্মিকভাবে উপস্থিত হয়ে একজন বয়োবৃদ্ধ ভণ্ডপীরকে তাঁর এক যুবক মুরিদের যুবতী স্ত্রীকে বিবাহ করার নির্দেশ দিচ্ছেন এবং সেমতে ওই পীর (হুজুর কেবলা) অনিচ্ছা সত্ত্বেও উম্মতের কল্যাণ চিন্তায় ওই বিবাহিতা যুবতীকে শরিয়তের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বিবাহ করছেন। পুরো বিষয়টাকে অত্যন্ত নোংরাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে—একটি মুসলিম প্রধান দেশের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বস্তরে ধর্মের এহেন অবমাননা ও ধর্মবিদ্বেষের এমন বিষাক্ত বীজ কারা ঢুকিয়ে দিচ্ছে এবং কারা ওদের সহযোগিতা ও প্রশ্রয় দিচ্ছে। মূলত এহেন শিক্ষাই আমাদের জাতির নৈতিক মেরুদণ্ড প্রতিনিয়ত ভেঙে দিচ্ছে এবং সমাজে অনৈতিকতা, ধর্মদ্রোহিতা ও নবী বিদ্বেষের ঝড় বইয়ে দিচ্ছে। মুসলমানের সন্তানরা শিক্ষার নামে কী বিষ গিলছে! পাঠ্যপুস্তকের বাইরে নানাভাবে পবিত্র কোরআন, মহান আল্লাহ ও তাঁর মহান রাসুল (সা.)-এর অবমাননা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহান আল্লাহ, রাসুল (সা.) পবিত্র কোরআন ও ইসলামের বিরুদ্ধে এক-একটি ভয়ঙ্কর হামলা চালানো হবে আর ধরা পড়ার পর এবং মুসলিম জনতার হৃিপণ্ডে রক্তক্ষরণ শুরু হওয়ার পর আয়েশিভঙ্গিতে ‘স্যরি’ বলে দেয়া হবে, একটি মুসলিম দেশ তো এভাবে চলতে পারে না। অন্যায় হত্যাকাণ্ডের পর মুখে ‘স্যরি’ বলে দিলেই কি ল্যাঠা চুকে যায়? অপরাধীর দায় শেষ হয়ে যায়। বিষয়টি আমাদের বুঝতে হবে এবং সে হিসেবে কর্তব্য স্থির করতে হবে।
0 comments:
Thanks for Comment