গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তনে করণীয়
প্রথম তিন মাস : প্রস্রাব বা রক্ত পরীক্ষায় যদি বোঝা যায় আপনি সন্তানসম্ভবা তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এ সময় অনেকের বমির ভাব হয়, বমিও হয়। এতে ঘাবড়ানো কিছু নেই। অনেকের খাবারে অরুচি তৈরি হয় বা নতুন কোনো খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। এ সময় ফলিক এসিড সেবনে বাচ্চার মস্তিষ্ক সুগঠিত হয়।
তিন থেকে পাঁচ মাস : প্রথম তিন মাসে যেমন খারাপ লেগেছিল শরীর তার অনেকটাই এ সময় দূর হয়ে যাবে। আরামদায়ক ঢিলেঢালা কাপড় পরুন। মজার ব্যাপার হলো, এ সময় বুঝতে পারবেন আপনার বাচ্চা পেটের মধ্যে নড়াচড়া করছে। আস্তে আস্তে বাচ্চার নড়াচড়া আরও স্পষ্ট হয়।
পাঁচ থেকে সাত মাস : এ সময় আপনার পেট দ্রুত বাড়তে থাকবে এবং বাহ্যত দৃশ্যমান হবে আপনি গর্ভবতী। আগের চেয়ে ক্ষুধা বেড়ে যাবে। এ সময় সুষম খাবার খেতে হবে। যেমন- রুটি, আলু, ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, পানির, দুগ্ধ জাতীয় খাবার, শস্য জাতীয় খাবার ইত্যাদি। এক কথায় সহজে হজম হয় এমন খাবার খাবেন। বেশি তেল চর্বিযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া পরিহার করুন। সবুজ পাতাযুক্ত সবজি, টমেটো, লেবু, আমলকী, বাদাম ক্যালসিয়াম ও আয়রনের অভাব পূরণ করে।
সাত থেকে আট মাস : ভাবতে শুরু করুন আপনার বাচ্চার জন্য আপনি কি কি করতে চান। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গোছাতে শুরু করুনআপনার আরও সন্তান থাকলে তাদের সঙ্গে সময় কাটান। একই রক্তের গ্রুপসম্পন্ন বন্ধু বা আত্মীয় ঠিক রাখুন যিনি প্রয়োজনে রক্ত দিতে পারবেন। হাঁটহাঁটি সর্বোৎকৃষ্ট ব্যায়াম।
আট থেকে নয় মাস : যদি হাসপাতালে বাচ্চা প্রসব করান তবে আগে থেকেই কাপড়-চোপড়, টাকা-পয়সা, সেবাদানকারীর ব্যবস্থা করে রাখুন। প্রসবব্যথা ওঠার আগে প্রয়োজনীয় টেলিফোন নম্বর সংগ্রহে রাখুন। গর্ভাবস্থার শেষ সপ্তাহগুলো অত্যন্ত দীর্ঘ মনে হয়। তাই এ সময় এমন কিছু করুন যেন একঘেয়েমি না লাগে। তলপেট শক্ত, কোমরের ব্যথা সামনে তলপেট পর্যন্ত ছড়িয়ে যাওয়া, বারবার ব্যথা ওঠা, পানি ভাঙা, রক্তমিশ্রিত প্রসাব বের হওয়া প্রসব বেদনার লক্ষণ।
গর্ভাবস্থার কিছু সাধারণ সমস্যা ও করণীয়
গর্ভাবস্থায় সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে শরীরকে প্রচুর কাজ করতে হয়। কিছু পরিবর্তন আপনার কাছে অসুবিধাজনক মনে হতে পারে। যদি কোনো সমস্যা মারাত্দক হয়ে দেখা দেয়, তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বমিভাব : বমি ভাব প্রথম দিকের একটি সাধারণ সমস্যা, তবে কেউ কেউ এতে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কোমর ও পেটে ব্যথা : বাচ্চা প্রসবে সহায়তার জন্য হাড়জোড়া ও মাংসপেশিগুলো এ সময় শিথিল হতে থাকে। এছাড়া মায়ের বহনকারী বাচ্চার ওজন এ ব্যথার কারণ। এ সময় ভারী কাজ ও ঝুঁকে কাজ করার প্রবণতা পরিহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
* হরমোনের পরিবর্তনের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। এ কারণে শাকসবজি ও প্রচুর পানীয় খেতে হবে।
* শরীরে পানি জমার কারণে গায়ের গিটা বা পা ফোলে। নানা কারণে এ পানি জমতে পারে।
* মাংসপেশির সঙ্কোচনের ফলে এক ধরনের টাটানো ব্যথা হয়। এটি সাধারণত ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে ঘটে। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সেবনে এর প্রকোপ কমে যায়।
* পেটের আকৃতি বেড়ে যাওয়ার কারণে বদহজম বা বুক জ্বালা হয়। বুক জ্বালার পাশাপাশি অনেক সময় পাঁজরেও ব্যথা হতে পারে।
* এ সময় অনেক মহিলার মাথা ব্যথা হয়। শরীরের বিভিন্ন জায়গা কালো হতে পারে।
লেখক : গাইনোকলজিস্ট, ডা. পূরবী'স হেল্প ডেস্ক
- See more at: http://www.bd-pratidin.com
0 comments:
Thanks for Comment