ভারতীয় টিভি চ্যানেলের আগ্রাসন,দায়ী আমরাই !
আমাদের বাঙালির আকাশ সংস্কৃতির সিংহ ভাগ জুড়ে দখল করে নিয়েছে বর্তমানে ভারতীয় টি ভি চ্যানেল। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ টির মত প্রাইভেট টি ভি চ্যানেল। আর ও ৬ টির মত আসছে। তার মানে এ বছর এর শেষ দিকে হয়ত ২০ টি ভি চ্যানেল দেখা যাবে। পরিসংখান তো তাই বলে। Telis trial সুবিধা নিয়ে চলছে একমাত্র বি টি ভি। সরকার নিয়ন্ত্রিত এই চ্যানেল এর বর্তমান গ্রহন যোগ্যতা কতটুকু এটা আমরা সবাই জানি। আজ অজপাড়া গায়ে পৌঁছে গেছে star plus,star zalsa, star world, sony,zee bangle,etv bangla, ruposi,tara bangla, টাটা, কিংবা ডিশ টি ভির আশীর্বাদে মাত্র ৩০০০ টাকা খরচ করে তারা দেখছে এইসব চ্যানেল। এখন আর ক্যাবল অপারেটরদের কাছ থেকে ডিশ সংযোগ নেবার দরকার পড়েনা। একটা পরিসংখান এ দেখা যাচ্ছে প্রায় ৫০ ভাগের বেশি মানুষ ইন্ডিয়ান টি ভি চ্যানেল এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে । সর্বনাশ! কেন এই ইন্ডিয়ান চ্যানেল প্রীতি আমাদের? পরিসংখ্যান আর ও বলে ডিশ ব্যবহার করে এমন পরিবারের মোট মহিলাদের ৪০ ভাগ স্টার প্লাস,৩৫ ভাগ সনি,১৫ ভাগ স্টার জলসা দেখে। পরিসংখ্যান আর ও বলে ডিশ ব্যবহার করা পরিবার গুলির ৬০ ভাগ সদস্য বাংলা চ্যানেল দেখেনা! একি সর্বনাশা কথা।
কেন এই পরিনতি?
আমি ব্যক্তিগত ভাবে কিছু জরিপ করে, কিছু পত্রিকার সাহায্য নিয়ে, বিভিন্ন ওয়েব ঘাঁটাঘাঁটি করে কিছু কারন খুঁজে পেয়েছি। প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকে হয়তো জানেন আমাদের টিভি চ্যানেল ইন্ডিয়ায় প্রচারের অনুমতি নেই। অর্থাৎ ইন্ডিয়ান নাগরিক চাইলেও বাংলাদেশী চ্যানেল দেখতে পারেনা। অথচ আমরা দেদারসে দেখছি ইন্ডিয়ান চ্যানেল। ঐ দেশের সরকার যদি বাংলাদেশী চ্যানেল এর প্রবেশাধিকার না দেয়, তবে আমরা দিচ্ছি কার স্বার্থে? স্বার্থ আসে হয়তোবা। যাই হোক সেই দিকে নাই বা গেলাম। এবার আশা যাক কেন ইন্ডিয়ান চ্যানেল প্রীতি।
১। প্রিয় পাঠক জাতী হিসাবে পহেলা বৈশাখে যত ই বাঙ্গালিয়ানা দেখাইনা কেন, ভিন দেশি জিনিসের প্রতি একটি দুর্বলতা আমাদের সব সময় রয়েছে। একটি কাপড়, একটি শার্ট, প্যান্ট, ইলেক্ট্রিক ইকুইপমেন্ট, প্রসাধনী সব ই বিদেশী চাই। এটি আবার কারো মানসিক ব্যাধি ও বটে, বিদেশী মানেই উন্নত জিনিস।
২। কাজেই ভিনদেশী টি ভি চ্যানেল এর প্রতি মানসিক ব্যাধিটি এখানে অনেকটা কাজ করে।
৩। প্রযুক্তি বা কারিগরি দিক দিয়ে আমরা ইন্ডিয়া থেকে অনেক পেছনে। এতে কোন সন্দেহ নেই। ওরা যেই এইচ ডি ফরমেটে সুট করে, আমরা সেটা পারিনি এখনও। যার কারনে ওদের ভিডিও ফুটেজ এত প্রাণবন্ত। ওদের ল্যাব অনেক উন্নত।জেই কারনে আমাদের দেশের অনেক বিজ্ঞাপন এই দেশে বানিয়ে ও ইন্ডিয়াতে ল্যাব প্রিন্ট করতে হয়।
৪।একটা মুভি বা নাটক ,বা অন্য যে কোন অনুষ্ঠানই বানানো হোক না কেন, তাঁকে প্রানবন্ত করতে দুইটি জিনিস জরুরি।এক, সুন্দর সেট, দুই, চমৎকার লাইটিং। পাঠক লক্ষ্য করুন ইন্ডিয়ান টি ভি চ্যানেল এর সেট চোখ ধাঁধানো। আমরা পেছনে আছি এখানেও ।
পাঠক ভাববেন শুধু কি এই সব কারনে ইন্ডিয়ান চ্যানেল প্রীতি? না! এবার বলি কিছু বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা।
৫।দেখুন সময় জ্ঞান বলতে আমাদের টিভি চ্যানেল কারো ধার ধারে না।(এক মাত্র নিউজ এর ক্ষেত্র বাতিত) কখন প্রোগ্রাম শুরু হবে সেইটা দর্শক পূর্বে থেকে জানেনা। ইন্ডিয়ান চ্যানেল এর দিকে তাকান। প্রতি ৩০ মিনিটে একটি চাঙ্ক হিসেবে তারা অনুষ্ঠান চালায়। তার মানে তারা ঠিক রাত ৮.৩০ মিনিটে স্টার জলসায় “মা” সিলিয়াল দেখে। ইন্ডিয়ান যে কোন টি ভি চ্যানেল কোন অবস্থায় ই টাইম ব্রেক করেনা। আপনি একটু পরখ করে দেখতে পারেন।
৬। এবার আমরা কি করি। একটা উদাহরণ দেই। ধরুন এন টি ভি রাতের নিউজ এর পর একটা নাটক দেখাবে,নিউজ শুরু হোল ৭.৩০ এ। শেষ হোল ৮,১৫ মিনিটে। এবার তারা ট্রেইলার দেখাল। এর পর দেখবেন অমুক নাটক। সৌজন্যে……………………………।? এবার শুরু হলো বিজ্ঞাপন। রাত তখন প্রায় ৮.৪৫।এবার ট্রেইলার, এখন দেখুন নাটক……? এইবার যাদের সৌজন্যে প্রোগ্রাম তাদের বিজ্ঞাপন। শুরু হলে আবার ১০ মিনিট। এইবার নাটক হোল শুরু। খণ্ড নাটক দেখবে দর্শক। ৫ মিনিট শুরু হতে নাটক আবার বিজ্ঞাপন। মোট নাটক ১৭ মিনিট।বিজ্ঞাপন ২০ মিনিট। আমার কথা বিশ্বাস না হলে আজ ই দেখে নিন। আমরা বিজ্ঞাপনের মাঝে নাটক দেখি। ইন্ডিয়ান চ্যানেল নাটকের মাঝে বিজ্ঞাপন দেখায়। এটা ও পরখ করে পাঠক দেখুন।
৭।এবার বলুন, ১৭ মিনিটের সিরিয়াল বা নাটক দেখতে বসে থাকতে হচ্ছে প্রায় ৬০ মিনিট,আপনার এত সময় বা ধৈর্য আছে কি?
৮।ইন্ডিয়ান চ্যানেল যেখানে ৩০ মিনিটের প্রোগ্রামে সর্বোচ্চ ৭ মিনিট সময় লাগায় বিজ্ঞাপনে ,সেইখানে আমরা লাগাই এক ঘণ্টা।
৯। পাঠক ভাববেন, বিজ্ঞাপনে না চললে চ্যানেল চলবে কেমন করে? যারা ইতিমধ্যে ভাবা শুরু করেছেন লেখককে কমেন্ট অপশনে গিয়ে এইটা লিখে সাইজ করবো। তাদের সেই সুযোগটুকু দিচ্ছি না বলে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। দেখুন টি ভি মিডিয়াতে কাজ করেছি অনেকটা সময়। টি ভি চ্যানেল চলে বিজ্ঞাপনে- এটা ঠিক। তবে সেই বিজ্ঞাপনের জন্য যদি দর্শক সরে যায়, মানে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে স্পন্সর পাবেন কেমন করে? এইটা কিন্তু অনেক টি ভি চ্যানেল এখন বুঝতে পেরেছে। তাই তারা এখন ট্রেইলার দেখায়…………অমুক দিন দেখুন বিরতিহীন নাটক…………?
পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের কিছু ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও আমাদের অনুষ্ঠান এর মান খুব একটা খারাপ নয়। শুধু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে দেশি চ্যানেল গুলি দর্শক হারাচ্ছে। সরকার অন্তত কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে ও যেন ইন্ডিয়াতে আমদের চ্যানেল গুলি চালানোর ব্যাবস্থা করে। সেই ক্ষেত্রে বিদেশে চ্যানেল চালান বাবদ আমরা বড় একটা গেট ওয়ে পেমেন্ট পাবো। চ্যানেলগুলি অতিরিক্ত অর্থ পাবে। বিজ্ঞাপন এর জন্য তখন তারা পাগলামি করবে না। যেইটা করেনা ইন্ডিয়ান চ্যানেল । কারন পে চ্যানেল হবার কারনে তারা অতি বেশি বিজ্ঞাপন মুখী নয়।
কেন এই পরিনতি?
আমি ব্যক্তিগত ভাবে কিছু জরিপ করে, কিছু পত্রিকার সাহায্য নিয়ে, বিভিন্ন ওয়েব ঘাঁটাঘাঁটি করে কিছু কারন খুঁজে পেয়েছি। প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকে হয়তো জানেন আমাদের টিভি চ্যানেল ইন্ডিয়ায় প্রচারের অনুমতি নেই। অর্থাৎ ইন্ডিয়ান নাগরিক চাইলেও বাংলাদেশী চ্যানেল দেখতে পারেনা। অথচ আমরা দেদারসে দেখছি ইন্ডিয়ান চ্যানেল। ঐ দেশের সরকার যদি বাংলাদেশী চ্যানেল এর প্রবেশাধিকার না দেয়, তবে আমরা দিচ্ছি কার স্বার্থে? স্বার্থ আসে হয়তোবা। যাই হোক সেই দিকে নাই বা গেলাম। এবার আশা যাক কেন ইন্ডিয়ান চ্যানেল প্রীতি।
১। প্রিয় পাঠক জাতী হিসাবে পহেলা বৈশাখে যত ই বাঙ্গালিয়ানা দেখাইনা কেন, ভিন দেশি জিনিসের প্রতি একটি দুর্বলতা আমাদের সব সময় রয়েছে। একটি কাপড়, একটি শার্ট, প্যান্ট, ইলেক্ট্রিক ইকুইপমেন্ট, প্রসাধনী সব ই বিদেশী চাই। এটি আবার কারো মানসিক ব্যাধি ও বটে, বিদেশী মানেই উন্নত জিনিস।
২। কাজেই ভিনদেশী টি ভি চ্যানেল এর প্রতি মানসিক ব্যাধিটি এখানে অনেকটা কাজ করে।
৩। প্রযুক্তি বা কারিগরি দিক দিয়ে আমরা ইন্ডিয়া থেকে অনেক পেছনে। এতে কোন সন্দেহ নেই। ওরা যেই এইচ ডি ফরমেটে সুট করে, আমরা সেটা পারিনি এখনও। যার কারনে ওদের ভিডিও ফুটেজ এত প্রাণবন্ত। ওদের ল্যাব অনেক উন্নত।জেই কারনে আমাদের দেশের অনেক বিজ্ঞাপন এই দেশে বানিয়ে ও ইন্ডিয়াতে ল্যাব প্রিন্ট করতে হয়।
৪।একটা মুভি বা নাটক ,বা অন্য যে কোন অনুষ্ঠানই বানানো হোক না কেন, তাঁকে প্রানবন্ত করতে দুইটি জিনিস জরুরি।এক, সুন্দর সেট, দুই, চমৎকার লাইটিং। পাঠক লক্ষ্য করুন ইন্ডিয়ান টি ভি চ্যানেল এর সেট চোখ ধাঁধানো। আমরা পেছনে আছি এখানেও ।
পাঠক ভাববেন শুধু কি এই সব কারনে ইন্ডিয়ান চ্যানেল প্রীতি? না! এবার বলি কিছু বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা।
৫।দেখুন সময় জ্ঞান বলতে আমাদের টিভি চ্যানেল কারো ধার ধারে না।(এক মাত্র নিউজ এর ক্ষেত্র বাতিত) কখন প্রোগ্রাম শুরু হবে সেইটা দর্শক পূর্বে থেকে জানেনা। ইন্ডিয়ান চ্যানেল এর দিকে তাকান। প্রতি ৩০ মিনিটে একটি চাঙ্ক হিসেবে তারা অনুষ্ঠান চালায়। তার মানে তারা ঠিক রাত ৮.৩০ মিনিটে স্টার জলসায় “মা” সিলিয়াল দেখে। ইন্ডিয়ান যে কোন টি ভি চ্যানেল কোন অবস্থায় ই টাইম ব্রেক করেনা। আপনি একটু পরখ করে দেখতে পারেন।
৬। এবার আমরা কি করি। একটা উদাহরণ দেই। ধরুন এন টি ভি রাতের নিউজ এর পর একটা নাটক দেখাবে,নিউজ শুরু হোল ৭.৩০ এ। শেষ হোল ৮,১৫ মিনিটে। এবার তারা ট্রেইলার দেখাল। এর পর দেখবেন অমুক নাটক। সৌজন্যে……………………………।? এবার শুরু হলো বিজ্ঞাপন। রাত তখন প্রায় ৮.৪৫।এবার ট্রেইলার, এখন দেখুন নাটক……? এইবার যাদের সৌজন্যে প্রোগ্রাম তাদের বিজ্ঞাপন। শুরু হলে আবার ১০ মিনিট। এইবার নাটক হোল শুরু। খণ্ড নাটক দেখবে দর্শক। ৫ মিনিট শুরু হতে নাটক আবার বিজ্ঞাপন। মোট নাটক ১৭ মিনিট।বিজ্ঞাপন ২০ মিনিট। আমার কথা বিশ্বাস না হলে আজ ই দেখে নিন। আমরা বিজ্ঞাপনের মাঝে নাটক দেখি। ইন্ডিয়ান চ্যানেল নাটকের মাঝে বিজ্ঞাপন দেখায়। এটা ও পরখ করে পাঠক দেখুন।
৭।এবার বলুন, ১৭ মিনিটের সিরিয়াল বা নাটক দেখতে বসে থাকতে হচ্ছে প্রায় ৬০ মিনিট,আপনার এত সময় বা ধৈর্য আছে কি?
৮।ইন্ডিয়ান চ্যানেল যেখানে ৩০ মিনিটের প্রোগ্রামে সর্বোচ্চ ৭ মিনিট সময় লাগায় বিজ্ঞাপনে ,সেইখানে আমরা লাগাই এক ঘণ্টা।
৯। পাঠক ভাববেন, বিজ্ঞাপনে না চললে চ্যানেল চলবে কেমন করে? যারা ইতিমধ্যে ভাবা শুরু করেছেন লেখককে কমেন্ট অপশনে গিয়ে এইটা লিখে সাইজ করবো। তাদের সেই সুযোগটুকু দিচ্ছি না বলে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। দেখুন টি ভি মিডিয়াতে কাজ করেছি অনেকটা সময়। টি ভি চ্যানেল চলে বিজ্ঞাপনে- এটা ঠিক। তবে সেই বিজ্ঞাপনের জন্য যদি দর্শক সরে যায়, মানে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে স্পন্সর পাবেন কেমন করে? এইটা কিন্তু অনেক টি ভি চ্যানেল এখন বুঝতে পেরেছে। তাই তারা এখন ট্রেইলার দেখায়…………অমুক দিন দেখুন বিরতিহীন নাটক…………?
পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের কিছু ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও আমাদের অনুষ্ঠান এর মান খুব একটা খারাপ নয়। শুধু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে দেশি চ্যানেল গুলি দর্শক হারাচ্ছে। সরকার অন্তত কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে ও যেন ইন্ডিয়াতে আমদের চ্যানেল গুলি চালানোর ব্যাবস্থা করে। সেই ক্ষেত্রে বিদেশে চ্যানেল চালান বাবদ আমরা বড় একটা গেট ওয়ে পেমেন্ট পাবো। চ্যানেলগুলি অতিরিক্ত অর্থ পাবে। বিজ্ঞাপন এর জন্য তখন তারা পাগলামি করবে না। যেইটা করেনা ইন্ডিয়ান চ্যানেল । কারন পে চ্যানেল হবার কারনে তারা অতি বেশি বিজ্ঞাপন মুখী নয়।
0 comments:
Thanks for Comment