সব ধর্মের মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি

বিজ্ঞানীরা বলেন আকাশ বলতে কিছুই নেই। উপরে হল শূন্যতা। আমি বলি, আকাশ বলতে যদি কিছু না-ই থাকে তাহলে এ নামটি এলো কোথা থেকে। কোন জিনিস না থাকলে নামকরণ সম্ভব নয়। আমরা যা কিছু দেখতে পাই সবই আল্লাহ পাক সৃষ্টি করেছেন নামও তিনিই রেখেছেন। এ পৃথিবীতে যত ভাষা আছে সব ভাষার সৃষ্টিকর্তাও তিনিই। আমরা বাঙালি উপরের দিকে তাকিয়ে বলি ওটা আকাশ। ফারসি ভাষার লোকেরা বলে আসমান, আরবি ভাষার লোকেরা বলে সামাওয়াতুন, ইংরেজি ভাষার লোকেরা বলে স্কাই। এভাবে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের লোক, যার যার নিজ ভাষায় উপরে তাকিয়ে একটি নাম উচ্চারণ করছে। আকাশ বলতে যদি কিছু না-ই থাকে তাহলে তো মহাগ্রন্থ আল কোরআনও মিথ্যা হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনের সূরা বুরুজর শুরুতেই বলেছেন ‘ওয়াসসামায়ি জাতিল বুরুজ’। 


আকাশের আকৃতি : শূন্যতা বলে বিজ্ঞানীরা আকাশের আকৃিত বলে দিয়েছেন, কিন্তু তারা তা বুঝতে পারেননি। শূন্য+তা = শূন্যতা। শূন্য বলতে আমরা গোল চিহ্নকে বুঝি। আর তা বলতে কোন কিছু সম্বন্ধ করাকে বুঝি। বিজ্ঞানীরা বলে উপরে হল শূন্যতা। অর্থাৎ উপরে যা দেখি, তা হল গোল। অতএব, আকাশটা হল বিশাল গোল একটি বল, আর আকাশ বলের ঠিক মাঝ পজিশনে। আমাদের পৃথিবীটাও ছোট একটি বল। আর পৃথিবীর মাঝে যেসব ধাতুর খনি আছে; তারই আকর্ষণে চন্দ্র-সূর্য এবং তারকারাজি সবাই পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।


আকাশের সংখ্যা : কোরআনে বর্ণিত সাবয়ুনা সামাওয়াতুন, এর আলোকে সবাই জানে সাত আসমান। আসলে আরবের লোকেরা যখন কোন সংখ্যাকে গণনা করতে পারত না, তখন বলত সাবয়ুন অর্থাৎ অধিক। আল্লাহ পাকও আসমানের সঠিক সংখ্যা না বলে তাদের রীতি অনুযায়ী বলেছিলেন সাবয়ুনা সামাওয়াতুন। আকাশের সংখ্যা যে অধিক, তার প্রমাণ সূরা বুরুজের প্রথম আয়াত। এখানে আল্লাহ পাক বলেছেন, স্তরবিশিষ্ট আসমানসমূহের কসম! মানুষ যখন কসম খায়, তখন সর্বোচ্চ স্রষ্টা আল্লাহর কসম দেয় আর আল্লাহ কসম খেয়েছেন তাহলে শুধু বাংলা হিসাবের সাতটি স্তরবিশিষ্ট আসমানের তা মোটেই মানায় না। সাবয়ুন শব্দের বাংলা অর্থ সাত। বাংলার রীতি অনুযায়ী সাত সংখ্যা দিয়ে সংখ্যা গণনার শেষ যত ঠিক ততগুলোই স্তর টু স্তরবিশিষ্ট আকাশ রয়েছে।


আমাদের পৃথিবীটাকে যেমনিভাবে প্রথম আকাশ বেষ্টন করে আছে, তেমনিভাবে প্রথম আকাশকে দ্বিতীয় আকাশ, দ্বিতীয়কে তৃতীয়, তৃতীয়কে ৪র্থ অর্থাৎ একটি বলের মধ্যে আরেকটি বল। উল্লে¬খ্য, পৃথিবী থেকে উপরের দিকে যেমন প্রথম আকাশকে দেখতে পাই তেমনই প্রথম আকাশের উপর দাঁড়ালেও দ্বিতীয় আকাশও একইরকম দেখা যাবে, তবে সেখানে কোন চন্দ্র-সূর্য তারকারাজি নেই। শুধু প্রথম আকাশকেই তারকারাজি দ্বারা সৌন্দযর্মণ্ডিত করা হয়েছে। প্রথম আকাশ থেকে দ্বিতীয় আকাশের দূরত্ব এত বেশি যে, দ্বিতীয় আকাশে গিয়ে নিচের দিকে তাকালে প্রথম আকাশকে একটা ফুটবলের মতো মনে হবে, এমনিভাবে তৃতীয় আকাশে পৌঁছে দ্বিতীয় আকাশকেও একটি ফুটবলের মতো দিক নির্ভুল আলো নিয়ে জ্বলতে দেখা যাবে। এরকম ৭ লাখ কোটি স্তর টু স্তরবিশিষ্ট আকাশকে বেষ্টন করে আছে আরশে আজিম।


আরশে আজিমের বর্ণনা : মনে করুন ৭ লাখ কোটি স্তরবিশিষ্ট আকাশ নামক মহাবলের উপর দাঁড়িয়ে আছেন। মনে হবে লাল একটা মহাসমুদ্রের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। কারণ আরশে আজিম তৈরি লাল ইয়াকুত পাথর দিয়ে আরশে আজিমের লাল আভাই আপনাকেও লাল ইয়াকুত বানিয়ে ফেলেছে। উপরে তাকিয়ে মনে হবে ওই তো আরশে মুয়াল্লা। কিন্তু না, ওখান থেকে আরশে আজিম এত দূরে যে, আরশে আজিমে পৌঁছে নিচের দিকে তাকালে মহাকাশ নামক মহাবলটি একটা ফুটবলের মতো মনে হবে। মহান আল্লাহর মহান সৃষ্টি এরকমই। আরশে আজিমে আছে তিন সুরক্ষিত সিংহাসন, একটি আল্লাহ পাকের অপর দুটি আল্লাহর হাবিব এবং হাবীবার। আল্লাহর হাবিবকে সবাই চেনে, কিন্তু আল্লাহর হাবীবাকে কেউই জানে না। মুহাম্মদ যদি আল্লাহর হাবিব হন, তাহলে আল্লাহর হাবীবা হলেন মাহমুদা। যেমন কোরআনের বাণী।


‘আসা আঁইইয়াব আসাকা রব্বুকা মাকামাম মাহমুদা’ অর্থাৎ অচিরই আপনার প্রশংসিনীকে দান করব। হিন্দু ধর্মে প্রচলিত, সংস্কৃত ভাষায় যাদের বলা হয় ‘রাধা-কৃষ্ণ’, ‘রাধা শব্দের অর্থ বিশ্বমাতা আর কৃষ্ণ অর্থ প্রশংসিত। আরবি ভাষায় মুহাম্মদ অর্থৎ প্রশংসিত রাধা যদি হয় বিশ্বমাতা, তাহলে কৃষ্ণ বিশ্বপিতা। অর্থাৎ মুহাম্মদ এবং মাহমুদা, আল্লাহর হাবিব এবং হাবীবা, সব ধর্মই আল্লাহর, সব মানুষই আল্লাহর, সব ভাষাই আল্লাহর অতএব, বৃথাই তর্কাতর্কি। আল্লাহর হাবিব এবং হাবীবার আসন দুটি একই সঙ্গে অর্থাৎ জোড়াসন ওই আসনে সব মানুষের ছবি, নাম এবং ভাগ্য লেখা রয়েছে, এটাই লওহে মাহফুজ, অর্থাৎ সুরক্ষিত ফলক।
link

0 comments:

Thanks for Comment

Copyright © 2013 MEDIA INFO